মো. কাউছার:
লক্ষ্মীপুর জেলার চারটি উপজেলার সব ক’টি গ্রামের নারিকেল গাছে মড়ক দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের কোন তৎপরতা না থাকায় বাগান মালিকরা হতাশা গ্রস্ত হয়ে পড়েছে। জানা যায়, নারিকেল গাছের প্রত্যেকটি ডগলা প্রথমে সবুজ থেকে হলুদ এবং পরে হলুদ রঙ থেকে মরিচা হয়ে পোড়া রঙ ধারন করে ডোগলা পাতা গুলো ঝরে পড়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের গনিপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বাগানের পর বাগান, সব গুলো নারিকেল গাছে মড়ক লেগে আছে। এ ব্যাপারে বাগান মালিক শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার সব ক’টি গাছের মধ্যে মড়ক আছে, এটা কি ধরনের রোগ, তাও জানি না। গত ২/৩ মাস ধরে এই অবস্থায় আছে। কৃষি বিভাগের কোন লোকজন আসেনি। কাউকে কোন পরামর্শও দিতে দেখিনি। আমাদের লক্ষ্মীপুর জেলা নারিকেল চাষে বিখ্যাত। এই জেলার নারিকেল গাছ গুলো রোগে আক্রান্ত। এর থেকে রক্ষা পেতে হলে কি করতে হবে, তাও আমরা জানি না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, জেলায় ২৫৪০হেক্টর জমিতে নারিকেল বাগান রয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২হাজার ৩৫০ মেট্রিকটন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো বেলাল হোসেন খান উদাসীনতার অভিযোগ আস্বীকার করে জানান, আমার কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিচ্ছে। জেলার কিছু কিছু এলাকার নারিকেল গাছে মড়ক দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এই রোগ কমতে শুরু করেছে। প্রথমে আমরা বাগান মালিকদেরকে মাকড় নাশক এবং ৪/৫ দিন পরে ছত্র নাশক ওষধ নারিকেল গাছে দেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা আবহমান কাল ধরে সারা দেশে নারিকেলের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর টনে টনে নারিকেল লক্ষ্মীপুর থেকে সারা দেশে পাঠানো হয়। নারিকেল লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম কৃষি ফসল। নারিকেল ও এর ছোবড়াকে কেন্দ্র করে এ জেলায় প্রচুর কারখানা গড়ে উঠেছে। অর্থকারী ফসল হিসেবে এই অঞ্চলে নারিকেলও বিখ্যাত। তাই নারিকেল বাগান গুলো রক্ষায় কৃষি অধিদপ্তর সহ সংসৃষ্ট কর্মকর্তাদের এখনি মাঠে নামতে হবে। কৃষকের আশংকা দুস্বপ্নে পরিণত হওয়ার আগেই এই মকড় মোকাবেলার দাবি জানিয়েছে কৃষকেরা।